-----★---------★--------★---------★---
এক লোক রাসূলের দরবারে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! ক্ষুধা আমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের স্ত্রীদের কাছে খাবার চেয়ে পাঠালেন কিন্তু তাদের কাছে কিছুই পেলেন না,সকল স্ত্রী একই কথা বললেন যে, "সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন!আমার কাছে পানি ছাড়া আর কোনো খাবার নেই(যে তাকে দিব)। তখন রাসুল (সা) সাহাবাগনকে বললেন, "এমন কোন লোক কি পাওয়া যাবে যে, আজ রাতে এ লোকটিকে মেহমানদারী করবে[কিছু খাওয়াবে]? আল্লাহ তাকে রহমত করবেন"। আনসারী এক লোক দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একে মেহমান হিসাবে গ্রহণ করবো।
লোকটি তার স্ত্রীর নিকট গিয়ে বললেন,"দেখো,ইনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেহমান, সুতরাং কোন কিছু বাকী না রেখে সবকিছু দিয়ে হলেও মেহমানদারী করবে। মহিলা বললেন, আল্লাহর শপথ, আমার কাছে তো কেবল (অল্পএকটুক)বাচ্চার খাবারই অবশিষ্ট আছে। আনসারী বললেন, ঠিক আছে, রাতের খাবারের সময় হলে বাচ্চাকে ঘুম পাড়িয়ে দিও(যাতে তারা খাবারের জন্যে বায়না না ধরে বা কান্নাকাটি না করে) তারপর আমরা বাতি নিভিয়ে দিব,এবং তাকে বুঝাবো যে অন্ধকারে আমরাও খাচ্ছি।কিন্তু, এ রাতটি আমরা কষ্ট করে, না খেয়েই কাটিয়ে দিব, যাতে মেহমান খেতে পারে। কথামত তাই করা হলো, সকালে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আনসার লোকটি আসলেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, “মহান আল্লাহ গতরাত্রে তোমাদের কাণ্ড দেখে হেসেছেন। অথবা বলেছেন, আশ্চর্যান্বিত হয়েছেন।”
[বুখারী: ৩৭৯৮, ৪৮৮৯, মুসলিম: ২০৫৪]
আল্লাহ তায়ালা কতটা খুশি হয়েছেন,ভাবা যায়?
,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “সবচেয়ে উত্তম সাদাকাহ হচ্ছে, কষ্টে অর্জিত অল্প সম্পদ থেকে দান করা” [আবু দাউদ: ১৬৭৭, মুসনাদে আহমাদ: ২/৩৫৮, সহীহ ইবনে খুজাইমাহ: ২৪৪৪, ইবনে হিব্বান: ৩৩৪৬, মুস্তাদরাকে হাকিম: ১/৪১৪] যে সম্পদ তার নিজের খুব বেশী প্রয়োজন সেই সম্পদ থেকে দান করতে সক্ষম হওয়া খুব উচু মনের অধিকারী ব্যক্তি ব্যতীত আর কারও পক্ষে সম্ভব হয় না। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “তারা খাবারের মহব্বত থাকা সত্ত্বেও তা অন্যদের খাওয়ায়”। [সূরা আল-ইনসান:৮]
,
দান সাদকায়,অভাবী দুস্ত গরিবদের সাহায্য করার মনমানসিকতায় আমরা সেই সাহাবীর মতো হতে পারবো না এটা সুনিশ্চিত।
,
তবে,গল্পে এটা শিক্ষনীয় যে, দান সাদকার কতটা গুরুত্ব রয়েছে, আল্লাহ তায়ালা কতটা খুশি হন এ কাজে।
সুবহানআল্লাহ।